ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম
আসসালামু আলাইকুম,আশা করি সকলে ভালো আছেন| আজকের এই পোস্টটি মূলত তাদের জন্য যারা সম্পূর্ণ কাস্টমাইজ ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করতে চাচ্ছেন| আমি এই পোস্ট এ চ্যানেল তৈরি এ টু জেড দেখিয়েছি|
![]() |
ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম |
আপনারা আজকের পোস্ট থেকে নিচের সকল বিষয় জানতে পারবেন| যেমনঃ ইউটিউব চ্যানেল কি ? ইউটিউব কি ? ইউটিউব কে বা কারা তৈরি করেছে? ইউটিউব চ্যানেল খুলতে কি কি লাগে ? চ্যানেল এর প্রকারভেদ ?মোবাইল দিয়ে চ্যানেল খোলার নিয়ম ? ডেস্কটপ দিয়ে চ্যানেল খোলার নিয়ম ?ইউটিউব চ্যানেল ভেরিফাই করার নিয়ম ? চ্যানেল এ টু জেড কাস্টমাইজ উপায়?ভিডিও আপলোড করার নিয়ম ? ভিউ ও সাবস্ক্রাইব বাডানোর টিপস ?
আশা করি এই পোস্টের মাধ্যমে আমি ইউটিউব চ্যানেল খোলার এ টু জেড বিষয় তুলে ধরতে পেরেছি I নিচের নিয়মগুলো অনুসরণ করলে আপনি সফলভাবে চ্যানেল খুলতে পারবেন ,ইনশাল্লাহ|
ইউটিউব কি ?কে বা কারা তৈরি করেছে ?
ইউটিউব হলো একটি ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম | তিনজন পেপাল কর্মচারী চেড হার্লি ,স্টিভ চেন ও বাংলাদেশী বংশোদ্ভাত জাওয়াদ সহ তিনজন মিলে ২০০৫ সালে ইউটিউব প্রতিষ্ঠা করেন | এর জনপ্রিয়তা এবং ভিডিও শেয়ারিং এর জনপ্রিয়তা বাডতে দেখে ২০০৬ সালে গুগল ১.৬৫ বিলিয়ন ডলারের পরিবর্তে ইউটিউব কিনে নেয় |
ইউটিউব চ্যানেল কি ?
একটি ইউটিউব চ্যানলকে আপনি একটি দোকানের সাথে তুলনা করতে পারেন | ইউটিউব চ্যানেল বলতে ইউটিউব এপ এ প্রোফাইল তৈরি করাকে বোঝায়| যেটিকে ইউটিউব চ্যানেল বলা হয় ইনকাম করার জন্য প্রথমে আপনাকে একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করতে হবে |
ইউটিউব চ্যানেল খুলতে কি কি প্রয়োজন ?
প্রকৃতপক্ষে ইউটিউব চ্যানেল খোলা খুবিই সহজ কাজ | আপনার একটি স্মার্টফোন বা কম্পিউটার , ইন্টারনেট কানেকশন,জিমেইল ,ফোন নাম্বার থাকলে খুব সহজে একটি চ্যানেল তৈরি করতে পারেন |
আপনার মনে হতে পারে এখানে ফোন নাম্বারের প্রয়োজন কোথায় ?
ইউটিউব চ্যানেল ভেরিফাই করতে অবশ্যই একটি মোবাইল নাম্বার প্রয়োজন| সে হিসেবে বলা যায় যে একটি ইউটিউব চ্যানেল খোলার জন্য নিম্মের জিনিসগুলো প্রয়োজন হবে -
১. ইন্টারনেট সংযোগ মোবাইল বা কম্পিউটার
২. জিমেইল আইডি
৩.মোবাইল নাম্বার |
ইউটিউব চ্যানেল ধরন বা প্রকারভেদ ?
ইউটিউব চ্যানেল বা একাউন্ট দুই ধরনের হয়ে থাকে | একটি ব্রান্ড এবং অন্যটি পারসোনাল | ব্রান্ড চ্যানেল বলতে সে সব চ্যানেলকে বোঝায় যেগুলো কোনো একটি প্রতিষ্ঠান বা টিম এর অধীনে থাকে | আর পার্সোনাল একাউন্ট বলতে যে সব চ্যানেল একজন ব্যাক্তির অধীনে থাকে বা নিয়ন্তন করে থাকে| ব্রান্ড চ্যানেল গুলো একাধিক ব্যাক্তি ধারা পরিচালিত হওয়ার কারণে এই চ্যানেলগুলো পারসোনাল চ্যানেল থেকে সুন্দর হয়ে থাকে |
পারসোনাল চ্যানেল এ ব্যাক্তি নিজের ইচ্ছা মতো যেকোনো কিছু ভিডিও করে আপলোড করতে পারে | অপরদিকে ব্রান্ড চ্যানেল তাদের কোম্পানির পণ্য সম্পর্কে ভিডিও পাবলিশ করে থাকে |
এখানে চ্যানেল নাম এ ভিন্নতা থাকলেও দুই চ্যানেলের কাজ একই দুই একাউন্টই ভিডিও পাবলিশ করে এবং সেখান থেকে আয় করতে পারে
![]() |
ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম |
ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম
মোবাইল দিয়ে চ্যানেল খোলার নিয়ম ?
মোবাইল দিয়ে ইউটিউব চ্যানেল খোলা খুবই সহজ আগে বলেছি ইউটিউব চ্যানেল খোলার জন্য (একটি জিমেইল একাউন্ট ,ইন্টারনেট সংযোগ ডিভাইস এবং ভেরিফাই করার জন্য একটি নাম্বার ) প্রয়োজন হবে |
মোবাইল থেকে ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম:
১ .প্রথমে ইউটিউব অ্যাপ ইনস্টল করুন |
২ .ইউটিউব অ্যাপ এ প্রবেশ করুন |
৩ .টপ মেনুর টপ রাইট কর্ণার থেকে আপনার জিমেইল এর প্রোফাইল পিকচার এ ক্লিক করুন |
৪ .এরপর মাই চ্যানেল (My Channel) সিলেক্ট করুন |
৫ .আপনার চ্যানেল এর একটি Unique নাম দিয়ে Create Channel চাপুন
আপনার চ্যানেল তৈরি হয়ে যাবে এখন |
আপনি একটি জিমেইল দিয়ে একটি চ্যানেল তৈরি করতে পারবেন |
ডেস্কটপ বা কম্পিউটার দিয়ে চ্যানেল খোলার নিয়ম ?
এইসময়ে যদি আপনার কম্পিউটার এ চ্যানেল খোলা না থাকে সেক্ষেএ আপনাকে চ্যানেল খোলার জন্য নিচের ধাপ গুলো অবল্বন করতে হবে ঃ
১ .Browser থেকে ইউটিউব .কম এ প্রবেশ করতে হবে
২ .জিমেইল একাউন্ট সাইন ইন করুন
৩ .রাইট কর্ণারে থাকা প্রোফাইল এ ক্লিক করেন
৪.তারপর My চ্যানেল এ ক্লিক করুন
৫ .চ্যানেলের নাম লিখুন(অবশ্যই নাম ইউনিক দিতে হবে )
এরপর এ ক্লিক করুন
তৈরি হয়ে গেছে আপনার চ্যানেল তবে আপনাকে এই চ্যানেল থেকে আয় করার জন্য অবশ্যই কাস্টমাইজ করা উচিত |
ইউটিউবে সফল হওয়ার হওয়ার উপায়
চ্যানেল কাস্টমাইজ করার নিয়ম
আপনি যদি উপরের নিয়মে চ্যানেল তৈরি করে থাকেন তাহলে আমি বলব আপনি সঠিকভাবে চ্যানেল খুলতে পারছেন | শুধু উপরের নিয়মে চ্যানেল খুললে হবে না , আপনাকে অবশ্যই চ্যানেল দাড করানোর কাস্টমাইজ করতে হবে | চ্যানেল খুলে সঠিকভাবে কাস্টমাইজ করতে পারলে আপনার চ্যানেল গ্রো হওয়া থেকে কেউ আটকে রাখতে পারবে না|
নিচে চ্যানেল কাস্টমাইজ করার নিয়ম দেখানো হয়েছে --
১/ আপনাকে চ্যানেল কাস্টমাইজ করার জন্য অবশ্যই মোবাইল থেকে হলে Browser এ প্রবেশ করতে হবে তারপর চ্যানেল খোলার সময় ব্যবহার করা জিমেইল দিয়ে সাইন -ইন করতে হবে |
২/ তারপর Your Channel থেকে কাস্টমাইজ চ্যানেল এ যেতে হবে |
৩/ তারপর Channel customization থেকে Banding এ যেতে হবে| আগে যদি আপনি লগো ,ব্যানার ইমেজ না দিয়ে থাকেন তাহলে তা দিতে হবে| আর (Video Watermark) ভিডিও ওয়াটার মার্ক এ আপনার লগো দিতে হবে |
৪/ এরপর Basic info গিয়ে -
Name -
আপনার চ্যানেল নাম চেন্জ করতে পারবেন বা দিতে পারবেন |
Handle-
চ্যানেল নাম অনুসারে দেওয়া |
Description-
আপনার চ্যানেল সম্পর্কে ছোট করে লেখা |
links -
সোশ্যাল মিডিয়া যুক্ত করা |
Contact info-
আপনার সাথে যোগাযোগ করা যাবে এরকম একটা একটিভ জিমেইল দেওয়া |
উপরের নিয়মগুলো অনুসরণ করে ধাপগুলো পূরণ করতে হবে |
৫/ তারপর উপরের থ্রি ডট মেনুতে ক্লিক করতে হবে , নিচে সেটিংস এ যেতে হবে -
Settings (সেটিংস)- থেকে চ্যানেল এ যেতে হবে
Basic Info ---
Country - আপনি কোন দেশে বাস করেন সে দেশ সিলেক্ট করা |
keywords -আপনার চ্যানেল কি রিলেটেড তার কিওয়ার্ড লেখা |
Advanced Setting----------------
Feature eligibility- ভেরিফাই করা ,এখানে ২ নং অপশনটি ভেরিফাই করার জন্য একটি মোবাইল নাম্বার লাগবে | কাস্টম থাম্বমেইল ব্যবহার করার জন্য এটি ভেরিফাই করা প্রয়োজন|
শেষ আপনার চ্যানেল ভেরিফাই এর কাজ | এবার আপনি নিচের নিয়ম অনুসরণ করে ভিডিও আপলোড করতে পারেন |
ভিডিও আপলোড করার নিয়ম ?
আগে বলেছি একটি ইউটিউব চ্যানেলকে একটি দোকানের সাথে তুলনা| ভিডিও হচ্ছে সেই দোকানের পণ্য | আপনাকে প্রথমে একটি ভিডিও তৈরি করতে হবে| যা আপনার চ্যানেল এ পাবলিশ করার জন্য প্রস্তুত করে রাখতে হবে | যেমন- টাম্বমেইল ডিজাইন,ট্যাগ রিচার্চ ইত্যাদি) |
নিচে ভিডিও পাবলিশ করার নিয়ম দেখানো হলো ঃ
১. ইউটিউব অ্যাপ এ প্রবেশ করতে হবে |
২.নিচের মেন্যু থেকে প্লাস চিহ্ন এ ক্লিক করতে হবে |
৩.আপলোড এ ভিডিও তে ক্লিক করতে হবে |
৪.আপনার তৈরি করা ভিডিও সিলেক্ট করুন |
৫.টাইটেল ,ডেসক্রিপসন ইত্যাদি যুক্ত করুন |
৬.এরপর আপলোড এ চাপুন |
হয়ে গেছে আপনার ভিডিও আপলোড
![]() |
ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম |
চ্যানেলে ভিউ , সাবস্ক্রাইবার বৃদ্ধি, এবং বড় করার টিপস ?
একটি চ্যানেলের প্রাণ হচ্ছে ভিউ এবং সাবস্ক্রাইভার| আপনি যত ভিডিও পাবলিশ করেন না কেন সেই চ্যানেল এ যদি ভিউ না হয় তাহলে তা আপনার জন্য তেমন একটা খুশির কারণ হয়ে দাডাবে না| আবার আপনার কন্টেন্ট যদি ভালো হয় তাহলে অনেক ভিউ পাওয়া যায় আর ভিউ হলে সাবস্ক্রাইভার ও বৃদ্ধি পাবে
নিচে ভিউ ও সাবস্ক্রাইবার বাডানোর টিপস দেওয়া হলো:
১/ আপনাকে ভিউ বাডানোর জন্য অবশ্যই কন্টেন্টের উপর নজর দিতে হবে | যত ভালো কন্টেন্ট হবে তত চ্যানেল গ্রো করবে |
২/ সঠিকভাবে ভিডিও এডিট করুন| ভিডিও এডিট করার জন্য প্লে স্টোর এ অনেক এপ রয়েছে | যা আপনি ডাউনলোড করে ব্যবহার করতে পারেন |
৩/ অবশ্যই নিয়মিত ভিডিও আপলোড করতে হবে | কেননা আপনি একদিন ভিডিও পাবলিশ করে তিন দিন করলেন না তাহলে আপনার ভিউয়াস কমে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে |
৪/ ভিডিও ভাইরাল করার জন্য অবশ্যই আপনার চ্যানেল অপটিমাইজ বা কাস্টমাইজ করতে হবে| ট্যাগ ,ডেসক্রিপসন সঠিকভাবে দিতে হবে |
৫/ সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট লিংক করা ,যা ধীরে ধীরে আপনার পরিচিতি বাডাতে সাহায্য করবে|
৬/ আপনার ভিউয়ার কোন ভিডিও বেশি দেখতে চাই তা লক্ষ্য করুন | তাদের পছন্দের ভিডিও পাবলিশ করুন| আর অবশ্যই তাদের কমেন্টের উত্তর দেওয়ার চেষ্ঠা করুন |
৭/ কেউ খারাপ কমেন্ট করলে নিরাশ হবেন না| কারণ আপনি জানেন আপনি তা করতে পারবেন | ধৈয্য ধরে ভিডিও আপলোড করুন |
ইউটিউবিং সম্পর্কিত প্রশ্ন উত্তর
আমি কি ইউটিউবিং করে সফল হতে পারব ?
উ- হ্যা ,আপনি অবশ্যই ইউটিউবিং করে সফল হতে পারবেন | হাজার হাজার মানুষ এই কাজ করে সফল হচ্ছেন |
ইউটিউব থেকে কিভাবে আয় হয় ?
উ- আপনার চ্যানেল এ ১ হাজার সাবস্ক্রাইবার ,৪ হাজার ঘন্টা ওয়াচ টাইম পূর্ণ হলে আপনি আয় করা জন্য প্রস্তুত হবেন | তারপর থেকে আপনার আয় হবে|
ইউটিউব লগো সাইজ কত?
উ- ইউটিউব লগো সাইজ 98x98 pixels
ইউটিউব ব্যানার সাইজ কত?
উ- ইউটিউব ব্যানার সাইজ 2048x1152 pixels
শেষ কথা
যারা ইউটিউব চ্যানেল খুলে আয় করতে চাচ্ছেন আশা করি আজকের এইপোস্টটি তাদের অনেক উপকারে এসেছে|এরকম আরো নিত্য নতুনইউটিউব,ফেসবুক ,ফ্রিল্যান্সিং ইত্যাদি সম্পর্কিত জানতে আমাদের এই ওয়েবসাইটের সাথে যুক্ত থাকুন|
ইউটিউব চ্যানেল লিংকঃ https://youtube.com/@hrtechbd3